টিন সার্টিফিকেট কি – What is TIN Certificate

 টিন সার্টিফিকেট কি – What is TIN Certificate আপনি একটি দেশের নাগরিক হিসেবে সেই দেশের সরকারি নিয়ম অনুযায়ী আপনাকে অবশ্যই কর প্রদান করতে হবে। আর আপনার কর প্রদানের একটি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার এই হচ্ছে টিন নাম্বার বা (tax identification number), মূলকথা রাষ্ট্রকর্তৃক এই ধরনের আপনাকে একটি সার্টিফিকেট দেওয়া হবে সেটাকেই টিন সার্টিফিকেট বলে।

টিন সার্টিফিকেট কি – What is TIN Certificate
রাষ্ট্রকর্তৃক প্রদত্ত উক্ত সার্টিফিকেটের 10 সংখ্যার একটি আইডেন্টিফিকেশন নাম্বার দেওয়া হবে। উক্ত নাম্বারটি কর প্রদানকারীর তথ্য পরিচয় বহন করে। উক্ত টিন নাম্বারের সঙ্গে আপনার সকল আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহ উল্লেখিত থাকবে।

উক্ত টিন নাম্বার দ্বারা একজন কর  দাতাকে চেনার উপায় 

 টিন নাস্বার দ্বাড়া কর দাতাকে চেনার উপায় টিন নাম্বার কে ৩ভাগে ভাগ করা হয়েছে (৩+৩+৪) ১০ সংখ্যার ১ম ০৩ সংখ্যা করদাতা/ যার নানে এই tin certified তার কর প্রদানের অঞ্চল,  ২য় ৩ সংখা আপনার ব্যাবসা পরিধি/ চাকুরী বা আপনার পেশাকে নির্দেশ করে। ৩য় ৪ পরিসংখ্যা দাদা করদাতা এর নিজস্ব পরিচয় নিরূপণ করা যায়।

আপনি নিজেই নিজের টিন সার্টিফিকেট বের করতে পারবেন অনলাইনের মাধ্যমে। এর জন্য কোন ধরনের ফি প্রদান করতে হবে না। এবং আপনি যদি আপনার জন্য একটি টিন সার্টিফিকেট তৈরি করেন এর জন্য আপনাকে কর প্রদান করতে হবে না। যদি না আপনি নির্ধারিত সীমার ভিতরে থাকেন। সরকার কর্তৃক নির্ধারিত বার্ষিক আয় কর সীমার মধ্যে আসলে আপনার কর প্রদান করতে হবে অন্যথায় করতে হবে না।

বর্তমান সময়ে যুগ উন্নত হওয়ার কারণে, বাংলাদেশের স্থায়ী নাগরিক যে বাংলাদেশের ভোটার হয়েছে। মূলকথা যার একটি এনআইডি কার্ড রয়েছে সে ঘরে বসে অনলাইনের মাধ্যমে টিন সার্টিফিকেট বের করতে পারবে।

কত টাকা থাকলে আপনাকে কর দিতে হবে?

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের আইন কর আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের নাগরিকদের যত টাকার উপরে  হলে কর প্রদান করতে হবে।

  • একজন সাধারন পুরুষের আয় যদি বাৎসরিক তিন লক্ষ টাকা এর অধিক হয়
  • ৬৫ বছর এর উর্দ্ধে নাগরিকদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক 3 লক্ষ 50 হাজার টাকা
  • বাংলাদেশের নারী নাগরিকদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক 3 লক্ষ 50 হাজার টাকা
  • বাংলাদেশের প্রতিবন্ধীদের ক্ষেত্রে বাৎসরিক চার লক্ষ 50 হাজার টাকা

উপরোক্ত শর্ত অনুযায়ী কোন ব্যক্তির বাৎসরিক আয় যদি উত্তর লিমিট অতিক্রম করে সেক্ষেত্রে তার কর দেওয়া বাধ্যতামূলক।

যাদের কর প্রদান করতে হবে না

বাংলাদেশের নাগরিকদের ক্ষেত্রে উপোরে উক্ত লিমিট এর, নিচে যদি আপনার ইনকাম হয় সেক্ষেত্রে আপনার আয়কর প্রদান করতে হবে না। তবে যদি আপনার একটি টিন সার্টিফিকেট থাকে তবে আপনাকে 0 আয়কর বিবরণী প্রদান করতে হবে।

ভয় পাবার কিছু নেই কারণ অনলাইনের মাধ্যমে 0 বিবরণী জমা করা যায়

টিন সার্টিফিকেট কি কাজে আসবে?

অনেক ক্ষেত্রে ব্যাংক হতে বড় ধরনের লোন তোলার ক্ষেত্রে আপনাকে টিন সার্টিফিকেট জমা দিতে হয়। কৃষি ক্ষেত্রে আপনি পরবর্তিতে যদি কোন কিছু বিবরণী জমা নাও দেন তেমন কোন প্রবলেম হবে না।

টিন সার্টিফিকেট কেন এবং কাদের দরকার?

ব্যবসা, চাকরি সিটি কর্পোরেশনের নাগরিকদের ক্ষেত্রে অথবা শহরের ভিতরে কোন স্থাপনা কিনতে গেলে। বিভিন্ন জায়গায় আপনার টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন হতে পারে।

  • বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করতে গেলে ট্রেড লাইসেন্স প্রয়োজন হয় আর ট্রেড লাইসেন্স নিতে গেলে টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন পড়বে
  • আপনি যদি কোন ধরনের কার মাইক্রো অথবা কোন গাড়ি কিনতে যান তাহলে আপনার টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন পারবে
  • বাংলাদেশের সিটি কর্পোরেশন অঞ্চল গুলোতে কোন জমি অথবা স্থাপনা কিনতে গেলে
  • আপনার ব্যাংক হতে 3 লক্ষ টাকার অধিক লোন নিতে গেলে
  • ব্যাংক হতে ক্রেডিট কার্ড নিতে চাইলে
  • সঞ্চয়পত্র কিনতে
  • কোনো কোম্পানির শেয়ার কিনতে
  • নিজের কোম্পানি নিবন্ধন করতে
  • দেশের বাহির হতে কোন পণ্য আমদানি করতে চাইলে
  • মুক্ত পেশাজীবী যেমন হিসাবরক্ষক
  • আইনজীবী, চিকিৎসক, প্রকৌশলীদের পেশার চর্চা করতে তাদের বাৎসরিক আয় বিবনের জন্য
  • যদি বাংলাদেশের কোন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে চান যেমন মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রিত্ব
  • ব্যাবসায়িক সমিতি যদি কোনো বড় সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত হতে চায়
  • সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার দরপত্রে অংশ নিতে
  • বিভিন্ন ধরনের শেয়ারে গাড়ি দেওয়ার ক্ষেত্রে

উপরোক্ত সকল ক্ষেত্রেই আপনার টিন সার্টিফিকেট প্রয়োজন পড়বে যদিও আপনার আয়সীমা 3 লক্ষ টাকার নিম্নে হয়।

টিন সার্টিফিকেট এর ক্ষেত্রে ব্যক্তিগত পর্যায়ে সবথেকে বড় সুবিধা হচ্ছে আপনার ব্যাংকে জমাকৃত অর্থের 10% কর্তন করবে আর টিন সার্টিফিকেট না থাকলে 15 পার্সেন্ট কর্তন করবে।

ব্যক্তিগত পর্যায়ে টিন সার্টিফিকেট থাকার কিছু অসুবিধা

আপনার করযোগ্য ইনকাম থাকুক বা না থাকুক প্রতিবছর আপনাকে একটি শূন্য বিবরণী দাখিল করতে হবে।

যদি আপনি 0 বিবরণী দেখেন না করেন সেই ক্ষেত্রে আপনার অপরজন কৃত অর্থ কালো টাকা হিসাবে বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা রাখে সরকার।

টিন সার্টিফিকেট হতে নাম বাতিল করার উপায়

আপনি পরপর তিন বছর শূন্য বিবরণী দাখিল করার পর চতুর্থ বছরে গিয়ে আপনি চাইলে আপনার নাম আয় করতে হতে বাদ দিতে পারবেন অথবা চাইলে আর 0 বিবরণীর না জমা দিলেও চলবে।

একটি মোবাইল ফোন দিয়ে টিন সার্টিফিকেট এর জন্য আবেদন করে পিডিএফ আকারে টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করবেন কিভাবে। 

নিজেই নিজের টিন সার্টিফিকেট করতে পারবেন কোন ধরনের ঝামেলা ছাড়াই। এছাড়াও যদি আপনার পূর্বে টিন সার্টিফিকেট করার থাকে সে ক্ষেত্রে কোন ব্যক্তির নাম্বার দিয়ে আপনি নতুন ই-টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করতে পারেন।

অনলাইনে আয়কর সার্টিফিকেট/ tin certified রেজিস্ট্রেশন করার জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন

ধাপ ১- একাউন্ট রেজিস্ট্রেশন

টিন সার্টিফিকেট পাওয়ার জন্য প্রথমে আপনাকে একটি রেজিস্ট্রেশন করতে হবে তার জন্য সরাসরি secure.incometax.gov.bd এই লিঙ্কে ক্লিক করে  মেন্যু থেকে Register লিংকে ক্লিক করুন।

এখানে আমি সাজেস্ট করব ইউজার আইডি এর জায়গায় আপনার এনআইডি কার্ড নাম্বারটি দিন। এবং পাসওয়ার্ড এর জায়গায় আপনার ফোন নাম্বার দিন। সেক্ষেত্রে আপনার প্রতি বার বা পরবর্তীতে যখনই, সংশোধন করতে যাবেন খুব সহজেই ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড মনে রাখতে পারবেন।

আমি যেহেতু প্রতিবার পাসওয়ার্ড রিসেট করা একটা ঝামেলার কাজ অথবা ইউজার আইডি মনে নাও থাকতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার এনআইডি কার্ডের সিরিয়াল নাম্বার ব্যবহার করুন। এছাড়াও আপনি নিরাপত্তার স্বার্থে সকল পাসওয়ার্ড লিখে রাখুন।

আর সকল তথ্য দেওয়ার পর রেজিস্ট্রার অপশন এ ক্লিক করুন।

আপনার ফোন নাম্বারে (আপনি রেজিস্ট্রেশন করার সময় যে নাম্বারটি দিবেন সেই নাম্বারে) একটি কোড যাবে কোডটা বসিয়ে দিন।
ছয় ডিজিটের কোড টি দেওয়ার পর আপনার একাউন্ট কনফার্ম করে নিন।

আপনার একাউন্ট রেডি হয়ে গেলে অটোমেটিক লগ আউট হয়ে যাবে।

এবার লগইন অপশন এ ক্লিক করার পর নিজেই ইউজার আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়েছিলেন সেটি দিয়ে লগইন করুন।

এবার আপনার প্রয়োজনীয় সকল তথ্য পূরণ করে দিন৷ আমি সকল তথ্য অনেক নিখুঁতভাবে দেখি শুনি তারপর পূরণ করবেন। এখানকার কিছু তথ্য আছে পরিবর্তনশীল এবং কিছু তথ্য আছে ফিক্স যাবে পরিবর্তন করতে পারবেন না।

বিশেষ করে ইনকাম সোর্স এবং অন্যান্য যে জায়গাগুলো আছে একটু ভালো করে পূরণ করে দিবেন। আপনার নিজের ইনফরমেশন এর ক্ষেত্রে আপনার এনআইডি কার্ডের নাম্বার দিলে অটোমেটিক সেখান থেকে আপনার নিজস্ব সকল ইনফরমেশন কালেক্ট করে নেবে। এবং সেটা আপনার  সামনে একটি প্রিভিউ দিবে আপনি চাইলে আপনার মত পরিবর্তন করে নিতে পারবেন।

টিন সার্টিফিকেট বের করার নিয়ম

আপনার আয়ের উৎস নির্বাচন করবেন যেভাবে চাকরিজীবিদের ক্ষেত্রে Service, পেশাজীবি যেমন ডাক্তার, প্রকৌশলী, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট ইত্যাদি হলে Profession, ব্যবসা হলে Business নির্বাচন করুন।
টিন সার্টিফিকেট কি – What is TIN Certificate

প্রয়োজনে এই ছবিটি দেখে নিন এখানে আমি আমার ইচ্ছা মতো তথ্য দিয়েছে আপনার যেটি প্রয়োজন আপনি আপনার মত দিয়ে দিবেন
go to next click করার পর
টিন সার্টিফিকেট কি – What is TIN Certificate

এরকম একটি অপশন দেখতে পারবেন এখানে আপনি আপনার নিজস্ব ব্যক্তিগত ইনফরমেশন গুলো খুব ভালোভাবে দিবেন তাহলে এই ইনফর্মেশন কনফার্ম করার পর আপনার এনআইডি কার্ড প্রিভিউ করবে। 

বেক্তিগত তথ্যগুলোর ক্ষেত্রে সকল কিছু ইংরেজিতে লিখবেন। এবং সকল তথ্য আপনার এনআইডি কার্ডের যা দেওয়া আছে সে অনুযায়ী লিখবেন।

এরপর সকল কিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনি নেক্সট অপশনে ক্লিক করুন, এখানে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র অনুযায়ী আপনার দেয়া সকল তথ্য নির্বাচন কমিশনে দেয়া হয়েছিল যে তথ্যগুলো আপনাকে দেখানো হবে।

  • অনলাইনে সকল ক্ষেত্রে যেমন প্রত্যেকটা ক্ষেত্রেই এগ্রি অপশনে ক্লিক করি। এখানেও এ গিয়ে অপশন এ ক্লিক করেন, যে সমস্ত তথ্য আপনি ঠিক ভাবে পড়ে নিয়েছেন। তার পরে সাবমিট অ্যাপ্লিকেশন অপশনে ক্লিক করুন।

এখন আপনি এতক্ষণে যা যা তথ্য পূরণ করেছেন, সকল তথ্য আপনাকে প্রিভিউ দেখাবে আপনি সেখান থেকে preview অপশন এ ক্লিক করে সার্টিফিকেট বাটনে ক্লিক করে আপনি পিডিএফ আকারে আপনার টিন সার্টিফিকেট ডাউনলোড করে নিতে পারবেন।

আয়কর রিটার্ন দাখিল

যদি আপনার TIN রেজিস্ট্রেশন করা থাকে বা কোন প্রয়োজন এই কারনে টিন সার্টিফিকেট নিয়ে থাকেন রেজিস্ট্রেশন করে থাকেন, আপনাকে অবশ্যই প্রতিবছর ৩০ নভেম্বরের মধ্যে, আয়কর লিখিতভাবে 0 বিবরণী প্রদান করতে হবে

আপনি অনলাইনের মাধ্যমে 0 বিবরণী ফরম বা আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন।
  • আয়কর রিটার্ন দাখিল সংক্রান্ত বিস্তারিত জানতে  লিঙ্কে ক্লিক করুন
Share on Google Plus

About NDTV24

0 comments:

Post a Comment